ছবি: বাংলা
বলা হচ্ছে, ২০১৭ সালটা ঢাকাই শোবিজ তারকাদের ডিভোর্সের বছর। এ বছরে সর্বাধিক ডিভোর্স হয়েছে তারকা দম্পত্তির। মনের অমিল আর দাম্পত্য কলহের জের ধরে ঘটেছে এইসব ডিভোর্সের ঘটনা ঘটে। ফলে শোবিজে এখন সিঙ্গেল মাদার হওয়ার প্রবণতাই বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে ডিভোর্স যে ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ঘটুক না কেন এর প্রভাব পড়েছে সাধারণ সমাজে। কারণ তারকারা অনেক ক্ষেত্রেই ভক্তদের অনুকরণীয় হয়ে থাকে। তারকাদের ডিভোর্স নিয়ে হয় বাড়তি আলোচনা-সমালোচনাও।
মিডিয়ায় ডিভোর্সের ব্যাপারটি কিন্তু আগেও চলে এসেছে। তবে তার আকার এতোটা ছিল না তখন। যতটা এখন হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সমাজ বিজ্ঞানীরাও চিন্তিত। কারণ তারকাদের ডিভোর্সের ফলে সমাজেও ডিভোর্স প্রবণতা বেড়ে যায়। যদিও তারকাদের ডিভোর্স এখন কানে সহনীয় হয়ে গেছে। প্রতি মাসে এমন খবর শোনার জন্য প্রস্তুতই থাকেন ভক্তরা।
হাবিব-রেহান-তিশা:
এ বছর শুরুই হয়েছে বিচ্ছেদ দিয়ে। বছরের প্রথম মাসে ডিভোর্স হয় কণ্ঠশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ও রেহানের। এ দম্পতির ঘরে একটি ফুটফুটে ছেলে থাকলেও সম্পর্ক রাখতে পারেননি তারা। প্রথমে ডিভোর্সের কারণ তাদের ব্যক্তিগত বললেও পরে এতে তৃতীয় পক্ষের হাত রয়েছে বলে জানান রেহান। সেই তৃতীয়পক্ষটিও হচ্ছেন শোবিজ তারকা তানজিন তিশা। কারণ হাবিবের সঙ্গে তখন তানজিন তিশার প্রেম ছিল। যদিও এ প্রেমের খবরও এখন অতীত। ভেঙ্গে গেছে হাবিব তিশার সম্পর্কও। তবে তিশা বরাবরই এটি অস্বীকার করে আসছ্নে যে তার জন্য হাবিব রেহানের সম্পর্ক ভাঙ্গেনি। তাদের ব্যক্তিগত সমস্যার কারণেই সংসার ভেঙ্গেছে।
তাহসান-মিথিলা:
শোবিজের সর্বাধিক আলোচিত জুটি ছিলেন তাহসান ও মিথিলা। ভক্তদের কাছে সুখী দম্পতি হিসেবেই পরিচিত ছিল। তাদের ভাঙ্গনের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি শক খেয়েছে ভক্তরা। কারণ পর্দায় তারা রোমান্টিক কাপল হিসেবেই পরিচিত। ১১টি বছর পার করেছিলেন একসঙ্গে। আয়রা নামের একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে তাদের। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় তাহসান ও মিথিলা দুজনই তাদের ডিভোর্সের বিয়ষটি গণমাধ্যমকে জানান। তাহসান ও মিথিলা ভক্তরা তাদের বিচ্ছেদের খবরে ফেসবুকে গ্রুপ খোলেন ‘তাহসান-মিথিলার ডিভোর্স চাই না’ শিরোনামে। ভক্তরা ভেঙে পড়লেও এ তারকাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন তারা।
নিলয়-শখ:
দীর্ঘদিনের প্রেমের বিয়ে ছিল নিলয় ও শখের। মডেলিং করতে গিয়ে পরিচয় তাদের। কাজ করতে গিয়েই একে অপরের প্রতি ভালোলাগা। এরপর আবার মান অভিমানে দূরে চলে যাওয়া। মান ভাঙ্গলে ফের প্রেম অতঃপর বিয়ে। কিন্তু স্থায়িত্ব পেলনা তাদের সম্পর্কও। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। চলতি বছর ডিভোর্স হয় তাদের। কারও প্রতি কারও অভিযোগের কথা জানালেও উভয়ের প্রতি উভয়ের যে পাহাড়সম। সেটা গোপনই রেখেছেন তারা।
স্পর্শিয়া-রাফসান:
দীর্ঘদিন ধরেই এক ছেলের সঙ্গে প্রেম করে আসছিলেন স্পর্শিয়া। পরে সম্পর্ক ভাঙ্গে তাদের। দীর্ঘ দিনের এ প্রেম ভেঙ্গে যাওয়ার পর জিদের বসেই নির্মাতা রাফসানকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া। রাফসানের সঙ্গে টিকলোনা সংসার। বেকার ছেলে। আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদে চলে যান। এ বছর ভেঙ্গেছে অভিনেত্রী নোভা ও নির্মাতা মোহন খানের। দেড় বছর প্রেম করে ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর বিয়ে করেছিলেন তারা। ছয় বছর সংসার করার পর চলতি বছর ২৬ আগস্ট ঢাকা জজকোর্ট কাজী অফিসে তারা পরস্পরকে ডিভোর্স দেন।
মিলা-সানজারি:
সেপ্টেম্বর মাসে পপ গায়িকা মিলার ডিভোর্স হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সে সময় এ খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন তিনি। অবশেষে সেই গুজবই সত্যি হলো। ৬ অক্টোবর দিবাগত রাত ৩টার দিকে মিলা তার ফেসবুক ভেরিফায়েড ফ্যান পেজে ডিভোর্সের বিষয়টি জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। পারভেজ সানজারির সঙ্গে ১০ বছর প্রেম করার পর বিয়ে করেছিলেন মিলা। কিন্তু বিয়ের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় জানতে পারি আমার স্বামী একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত এমন আরও অভিযোগ এনে তাকে ডিভোর্স দেন মিলা।
শাকিব-অপু:
এ বছর সবচেয়ে আলোচিত ডিভোর্স হচ্ছে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের ডিভোর্স। যদিও এখনও ডিভোর্স হয়নি তাদের। প্রক্রিয়া রয়েছে বিষয়টি। বছর শেষে এটিই এখন আলোচনার বিষয়। অপু বিশ্বাসকে ডিভোর্সের চিঠি পাঠিয়েছেন শাকিব খান। তবে অপু বিশ্বাস এখনও এ ডিভোর্স মেনে নেননি। শাকিব খান এখন ছবির শুটিংয়ে ভারতে রয়েছেন। দেশে এলে আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টির সুরাহা করবেন বলে জানিয়েছেন অপু। এখন আবার শোনা যাচ্ছে তারে মিটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন পরিবার। তবে শেষ পর্যন্ত মনে হচ্ছে না তাদের সম্পর্কও প্রাণ পাবে।