ছবি: ইন্টারনেট
আপনি কি প্রেমে পড়েছেন? কিংবা দারুণ খুশি বা আপনার কি ভীষণ মন খারাপ? যেটাই হোক না কেন, আপনার সেই অনুভূতিটাকে কিন্তু পরিচালিত করছে হরমোন নামক এক ধরনের জৈবিক পদার্থ৷
জেনে নিন শরীর এবং মনে হরমোনের প্রভাব-
‘স্ট্রেস’ হরমোন
‘কর্টিসল’ হরমোন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রেস হরমোন, যা শরীর থেকে রাতে উৎপাদিত হয়ে দিনে কাজে লাগে৷ এই হরমোন মন ও শরীরের ‘ইমিউন সিস্টেম’ বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে, যা কোনো ‘ইনফেকশন’ বা ক্ষতের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে থাকে৷ তবে অতিরিক্ত স্ট্রেস হরমোন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক৷
যে হরমোন আমাদের আনন্দ দেয়
মন খারাপ? মন ভালো করতে জিমে যাবেন নাকি একটু মিষ্টি বা চকলেট খাবেন? আপনার শরীরের ‘সেরটোনিন’ হরমোনকে উজ্জীবিত করতে এই দুটোর একটাকে বেছে নিতে হবে৷ সেরটোনিন এবং ডোপামিন হরমোনকেও কিন্তু ‘হ্যাপিনেস হরমোন’ বা সুখ হরমোন বলা হয়ে থাকে, যা আমাদের মন-মেজাজ ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে৷ লক্ষ্য রাখবেন, শরীরে সুখ হরমোন কম হলে মেজাজ কিন্তু বিগড়ে যেতে পারে!
প্রেমে হাবুডুবু
প্রথম প্রেমে পড়ার অনুভূতি কে না জানে? অকারণেই হেসে ওঠা, ভালো লাগা, প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানোর সুখ বা আনন্দে রক্তচাপ যেন বেড়ে যায়৷ সব মিলিয়ে এক অসম্ভব ভালো লাগার অনুভূতি! ‘এন্ডরফিন’ হরমোন মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রে সক্রিয় হয়ে ওঠার কারণেই মুহূর্তগুলো এত মধুর মনে হয়, ছড়িয়ে দেয় ভালোলাগার অনুভূতি৷ এমনকি প্রেমে পড়ার সময়টাতে নাকি শরীরে ভীষণ ব্যথা পেলেও, প্রথম প্রথম তা টেরই পাওয়া যায় না৷
শিশু থেকে বড় হওয়া
শরীরের ‘সোমাট্রপিন’ বা গ্রোথ হরমোনই শিশুদের আস্তে আস্তে বড় হতে ও বুদ্ধি বাড়তে সাহায্য করে থাকে৷ শরীরের হাড় গঠন এবং প্রোটিন এবং জরুরি চর্বি তৈরিতেও কাজ দেয় এই হরমোন৷ তবে যদি কোনও শিশুর শরীরে এই হরমোন অতিরিক্ত পরিমাণে থাকে, তাহলে তারা অতিরিক্ত বেশি বড়সড় হয়৷ শরীরে হরমোন তৈরির প্রধান কেন্দ্র মস্তিস্ক থেকেই নিঃসৃত হয় এই হরমোন৷
বাইরে থেকে ‘ইনসুলিন’
শরীরে খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া বা বিপাকের জন্য ‘ইনসুলিন’ হরমোনটি দায়ী৷ এটি পেশির কোষগুলোর উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে এবং রক্ত থেকে গ্লুকোজ শোষন করে৷ ডায়বেটিস রোগীর শরীরে যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি না হওয়ার ফলে চিনি রক্তেই থেকে যায়, যে কারণে জীবন বিপন্নও হতে পারে৷ তাই ডায়বেটিস রোগীকে কম পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার পরমর্শ দেওয়া হয়৷ এতেও কাজ না হলে রোগীকে নিয়মিত বাইরে থেকে ইনসুলিন দিতে হয়৷
দেহঘড়ির জন্য হরমোন
‘মেলাটনিন’ হরমোন আমাদের শরীরে দিন এবং রাতের একটা ভারসাম্য বজায় রাখে৷ এই হরমোনই অন্ধকারে শরীরের ভেতর ছড়িয়ে যায় এবং আমাদের ক্লান্ত করে ঘুম পাড়িয়ে দেয়৷ ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালে জানিয়েছিল যে, মেলাটনিন হরমোন ‘জেটল্যাগ’ উপশম করতে খাদ্যের বিকল্প হিসেবেও কাজ করতে পারে৷ এই হরমোন ঘুম পাড়াতে এবং ঘুম থেকে জাগাতে সাহায্য করে৷