ছবি : সংগৃহীত
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর এবং লিনউড মসজিদে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের চার সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। ভয়ংকর সেই হত্যাযজ্ঞের স্মৃতি ওই এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়কে এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে মসজিদ দুটিতে জুমার নামাজে আগের মত সেরকম মুসল্লিদের সমাবেশ ঘটছে না বলে জানাচ্ছেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
লিনউড মসজিদের ইমাম ইব্রাহিম আব্দেলহালিম বার্তা সংস্থা এএফপিকে মুসল্লিদের ভীতির ব্যাপারে জানাতে গিয়ে বলেন, ‘তারা এখনো খুব ভীত অবস্থায় আছেন। স্বাভাবিক অবস্থায় জুমার নামাজে প্রায় ১০০ জনের মত মুসল্লি নামাজ পড়তে আসতেন কিন্তু এখন এই সংখ্যা ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। ’
ইমাম ইব্রাহিম উল্লেখ করেন, অনেক মুসল্লি আছেন যারা এই মসজিদে এসে নামাজ পড়তে চান কিন্তু সেদিনের ঘটনা হয়তো পুনরায় তাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে। এটা ভাল কিছু নয়।
১৫ মার্চ ২৮ বছর বয়সি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ দুটিতে ঢুকে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি করতে থাকে। ফলে নারী,পুরুষ এবং শিশুসহ ৫০ জন নিহত হন। শ্বেতাঙ্গ ওই শ্রেষ্ঠত্ববাদীর জঘন্য এই কর্মকাণ্ডে বিশ্ববাসী স্তম্ভিত হয়ে যায়। চারদিকে শোকের মাতম উঠে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নসহ সমগ্র দেশবাসী মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের পর নিউজিল্যান্ডের অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনা হয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার ঘোষণা দেন। মুসলিমদের নিজেদের মানুষ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু তারপরেও মুসলিম সম্প্রদায় সেই ভীতি এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেননি বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে চলতি সপ্তাহে ট্রাম্পের প্রশংসা করা একটি টি শার্ট পরিহিত ৩৩ বছর বয়সি একজন যুবক আল নূর মসজিদের সামনে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে গালাগালি করতে থাকে। এতোবড় এক হত্যাকাণ্ডের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্বেষপূর্ণ এই ঘটনায় স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় বেশ ধাক্কাই খান।
এই ঘটনার পর ড্যানিয়েল নিকোলাস তুয়াপায়া আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি নিজেকে মুসলিমবিদ্বেষী নন বলেও উল্লেখ করেন।
ক্রাইস্টচার্চ হত্যাকাণ্ডের এক মাস হতে চললো এখনো পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে ব্রেন্টন একাই অমানবিক এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তার আর কোন সহযোগী ছিল না। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাতীয় হুমকির মাত্রা এখনো উচ্চ স্তরেই রাখা হয়েছে।
বাংলা/এফকে