ছবি : বিবিসি থেকে নেয়া
মাত্র ৭৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের একটি দেশ। যেটির বাসিন্দা আবার একটি মাত্রই পরিবার। প্রিন্সিপালিটি অফ হাট রিভার নামের এই দেশটি অবশ্য একদিক দিয়ে অনন্য। গোলাপি বিচ থাকায় সেখানে ভ্রমণে যান প্রচুর পর্যটক। অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত দেশটি তৈরির কাহিনীও চমকপ্রদ।
ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার জানায়, প্রিন্সিপালিটি অফ হাট রিভার গড়ে উঠেছে একক তাগিদে। লিওনার্ড ক্যাসলি নামের এক ব্যক্তি সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে অস্ট্রেলিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এই দেশ গড়ে তোলেন।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া সরকার ১৯৬৯ সালে একটি আইন পাশ করে। আইনে বলা হয়, ১০০ একরের বেশি জমি রাখতে পাবেন না কেউ। এই বিলের বিরোধিতা করার কোনো জায়গা ছিল না সাধারণ নাগরিকদের জন্যে।
অথচ লিওনার্ড ক্যাসলির মালিকানাধীন জমির পরিমাণ প্রায় ১৩০০০ একর। কোনো সমাধান না পেয়ে নিজের ভূখণ্ডকে দেশ হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধিতায় জড়ানো লিওনার্দো নিজেকে প্রিন্স বলতেন। ব্রিটিশ রাণীর যেন অবমাননা না হয় সেজন্য নিজেকে কখনো ‘রাজা’ বলেননি লিওনার্দো। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মারা যান ৯৪ বছর বয়সী লিওনার্দো। আজীবনই তার সঙ্গে ব্রিটিশ রাণীর যোগাযোগ ছিল।
সারা পৃথিবীর পর্যটকরাই যান প্রিন্সিপালিটি অফ হাট রিভার ভ্রমণে। সেখানকার ভিসা পেতে লাগে মাত্র চার ডলার। অস্ট্রেলিয়া থেকে পাঁচশো কিলোমিটার কাঁচামাটির পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় প্রিন্সিপালিটি অফ হার্ট রিভারে। সেই পথের ধারে প্রকৃতি উজাড় করে দিয়েছে সৌন্দর্য। আর ‘দেশটি’র গোলাপি রঙের বিচ পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
এই মুহূর্তে দেশ চালাচ্ছেন দায়িত্ব লিওনার্ড ক্যাসলির ছেলে। যে দেশের নাগরিক তার বৃহত্তর পরিবারের সদস্যরাই। এত ক্ষুদ্র এলাকাকে দেশ বলে দাবি করার মতো অনেক কিছুই রয়েছে প্রিন্সিপালিটি অফ হার্ট রিভারের। এর রয়েছে নিজস্ব পতাকা ও নিজস্ব মুদ্রাও।
কম খরচে ঘোরার এত ভাল দেশ গোটা পৃথিবীতেই কম রয়েছে। যদিও এখানে রেস্তোরাঁ-হাসপাতাল কিছুই নেই। তবে অস্ট্রেলিয়া ঘুরতে গেলে দু’দিন বাড়তি সময় নিলেই ঘুরে আসা যায় প্রিন্সিপালিটি অফ হাট রিভার।
বাংলা/এসএ