ছবিঃ নিশাত তুলি
এখনও বুকে মাথা রাখলে
এখনও বুকে মাথা রাখলে
বিষম এই রাতকে—
অসীম বানাতে পারি!
প্রিয়জন হারানোর ব্যথা,
বুলেটের ক্ষত বুকে নিয়ে
মিছিলের শেষ বিন্দুতে—
এঁকে দিতে পারি একটি শব্দ— স্বাধীনতা!
রাষ্ট্রকে বলতে পারি— কচুকাটা করে!
মানুষ হয়নি তো তোমার প্রিয়তমা!
মিছে কেন করছো মুক্তির ছলনা।
পেরিয়ে গিয়েছ কি কখনো মানুষের সীমানা!
দ্বিধার চোখে কেন তাকাও?
কেন বলো তবে মানুষই তোমার শেষ ঠিকানা?
এখনও বুকে মাথা রাখলে
জানাতে পারি,মানুষের সমূহ বেদনা
তার গোপন লড়াইয়ের কথা!
শুনো হে নামহীন পাখি!
প্রিয় সেই ক্ষতে—
টিপ টিপ করে জ্বলে
তোমার বন্দীত্বের অসহায়ত্ব
চিতার আগুনের মতন!
কখনো প্রকৃত বাতাস পেলেই
জ্বালিয়ে দেবে জল্লাদের কারখানা।
তার সমূহ চিন্তার আখড়া!
এখনও চোখে চোখ রাখলে
ঠোঁটে ঠোঁট মিললে প্রকৃতই—
গভীর চুম্বনে শেষ করে দিতে পারি—
মানুষকে নিয়ে খেলে যাওয়ার
প্রিয় খেলা শাসকের!
জড়িয়ে ধরে পরস্পর পরস্পরকে
গোলাপ চাষ করতে পারি ভালোবাসার!
বন্দুকের প্রতিটি বুলেটে লিখে দিতে পারি
বুলেটের প্রিয় ফ্যাসিস্টের নাম!
অথবা মানুষের ঘাতকের দাম!
তবুও কেন দ্বিধার চোখে তাকাও!
এখনও বুকে মাথা রাখলে
জানাতে পারি, মানুষের অসুখের কথা—
তার ভুলে যাওয়া সুখের কথা!
কাঁটাতারে আটকে ফেলা তার
স্বপ্নহীন মুক্তির কথা!
তার বন্দীত্বের শিকলের কথা!
বাজারের হিসাবে মানুষের দামের কথা।
বলে দিতে পারি মুক্ত বাজার অর্থনীতির নামে
তোমাকে বন্দীর নয়া কলোনিয়াল পরিকল্পনার কথা।
ফাঁস করে দিতে পারি,
ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলশনের নামে
মানুষকে আরো জমাট করে বন্দীর
সাম্রাজ্যবাদীদের নতুন পরিকল্পনার কথা।
তাই এসো, এসো, তোমাকে খেয়ে ফেলার আগেই—
ফিরে এসো প্রকৃত নিশানায়!
লড়াইয়ের প্রকৃত ঠিকানায়।
এসো, চোখ রাখো প্রকৃত স্বপ্নের দিকে।
ভালোবাসা ফেরাও প্রকৃত ভালোবাসার দিকেই।
অন্যের শিকার হবার আগেই;
অন্যের খাবার হওয়াকেই স্বাধীনতা বলে জানো যদিও!
তাই বলে যাই,
এখনও বুকে মাথা রাখলে
বিষম এ রাতকে—
অসীম বানাতে পারি, জেনে রেখো!
বলে দিতে পারি মানুষের প্রকৃত ভালোবাসার কথা!
অনুভূতির গভীরতা— মানুষের মুক্তির
প্রকৃত লড়াইয়ের কথা।