ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস মানুষের কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে। এমনটাই উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায়। গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার এক তৃতীয়াংশের মধ্যে তীব্র কিডনি ইনজুরি এবং প্রায় ১৫% এর ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়েছে।
নিউইয়র্ক রাজ্যের বৃহত্তম স্বাস্থ্য সরবরাহকারী নর্থওয়েল হেলথের একটি দল এই গবেষণা করেছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের উপর গবেষণা ফলটি ১৪ মে, বৃহস্পতিবার কিডনি ইন্টান্যাশনাল জার্নালে প্রকাশ করা হয়।
নিউইয়র্কের গ্রেট নেকের হোফস্ট্রা/নর্থওয়েলের নেফ্রোলজির প্রধান ডা. কেনার জাভেরি বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে ৫,৪৪৯ জন রোগীকে ভর্তি করেছিলাম। যাদের মধ্যে তীব্র কিডনি ইনজুরি ছিলো শতকার ৩৬.৬ জন।’
কিডনি ফেলিওর মানে হচ্ছে যখন কিডনি শরীরের বর্জ্য ফিল্টার করতে অক্ষম হয়।
রয়টার্স বলছে, জাভেরি তার ফোন সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, কিডনি ব্যর্থতায় আক্রান্ত এ রোগীদের মধ্যে ১৪.৩% এর ডায়ালাইসিসের দরকার পড়েছে।
কোভিড -১৯ রোগীর কিডনি ইনজুরি নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গবেষণা। জাভেরি বলছিলেন, অন্যান্য হাসপাতালগুলো করোনাভাইরাসের ফলে এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের মুখোমুখি হয়েছে। এখন অবধি বিশ্বব্যাপী ৪৩ লাখের বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। এবং ৩ লাখের বেশি মানুষ তাতে মারা গেছেন।
বেশ কয়েকটি গ্রুপ কোভিড -১৯ রোগীদের মধ্যে কিডনি ব্যর্থতার হার বাড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। জাভেরি এবং তার সহকর্মীরা ১ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ৫৪৪৯ জন কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা রেকর্ড থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের উপরে এ গবেষণা চালিয়েছে।
গবেষণায় তারা দেখতে পান, কিডনি ইনজুরি হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন বা ভর্তি হওয়ার প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই অবস্থার শিকার হয়েছিলেন ৩৭.৩%।
জাভেরি বলছিলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থ এসব রোগীদের ভেন্টিলেটারে রাখার প্রয়োজন দেখা দিয়েছিলো।
এক হাজারেরও বেশি রোগীর মধ্যে যাদের ভেন্টিলেটর স্থাপন করা দরকার ছিল তাদের মধ্যে প্রায় ৯০% এর কিডনি ফেলিওর ছিলো। সে তুলনায় অন্যদিকে ৯২৫ জন রোগীর মধ্যে ২১.৭% যাদের কিডনি ইনজুরি ছিলো না তাদের যান্ত্রিক শ্বাস-প্রশ্বাসের সহায়তার প্রয়োজন হয়নি।
জাভেরি বলছিলেন যে খুব অসুস্থ রোগীদের প্রায়শই কিডনি ফেলিওর হয়ে যায় তখন তাদের অবস্থা আরো গুরুতর হয়ে ওঠে।
তবে এটি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নয়। এটা রোগীদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সাথে বেশি সম্পর্কিত বলে জাভেরি ও তার দল উল্লেখ্য করেছেন।
এই অবস্থার মধ্যে ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের এই হার জানার ফলে হাসপাতালগুলো ভবিষ্যতে করোনভাইরাসের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং কর্মীদের পরিকল্পনা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করতে পারে।