• নিজস্ব প্রতিবেদক
  • ২৫ মে ২০২০ ০৮:১৩:২৬
  • ২৫ মে ২০২০ ০৮:১৩:২৬
অন্যকে জানাতে পারেন: Facebook Twitter Google+ LinkedIn Save to Facebook প্রিন্ট করুন
বিজ্ঞাপন

ঘরে কী ঈদের নামাজ আদায় করা যায়?

ফাইল ছবি

নভেল করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের মধ্যেই এসে গেলা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। আর নামাজ দিয়েই শুরু হয় ঈদের উদযাপন। করোনার সংক্রমণের জন্য যেখানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন, সেখানে ঈদের জামাতে কিভাবে অংশগ্রহণ করবেন, এ নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

তবে এর সমাধান দিয়েছেন ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ আলেমরা। ঈদের নামাজ মূলত জুমার নামাজের মতই। জুমার জন্য যেসব শর্ত ঈদের জন্যও শর্ত সেই একই।

জুমা সাপ্তাহিক ঈদ আর ঈদ হচ্ছে বাৎসরিক আয়োজন। সাপ্তাহিক ঈদের মত হলেও বাৎসরিক আয়োজনে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আলেমরা। জুমার নামাজ আদায় ফরজ আর ঈদের নামাজ আদায় ওয়াজিব। অন্য মাজহাব মতে ঈদের নামাজ আদায় সুন্নত।

জুমার নামাজের পূর্বে ওয়াজিম হিসেবে দুটি খুতবা দিতে হয়। আর ঈদের নামাজের পর যে খুতবা দিতে হয় তা সুন্নত।

জুমার নামাজে বাড়তি তাকবির দিতে না হলেও ঈদের নামাজে ছয়টি অতিরিক্ত তাকবির দিতে হয়। প্রথম রাকাতের শুরুতে তিনটি আর পরের রাকাতে রুকুতে যাওয়ার আগে তিনটি তাকবির দেয়ার নিয়ম রয়েছে। সা. ইদের দিন সম্পর্কে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (দ.) বলেন, ‘হাযা ইদুনা ইয়া আহলাল ইসলাম। (অর্থাৎ, হে মুসলিম উম্মাহ! এটা আমাদের ইদ।) [বুখারী শরীফ ১/১৩৪]

কড়াকড়ি করে ঈদের আনন্দ উদযাপনকে কঠোর করে দেননি আল্লাহতা’লা। বরং তা কিছুটা সহজ করে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। এই নামাজ ফরজ করলে হয়তো স্বতঃস্ফূর্ত জামাত আদায়ের আনন্দ থাকত না। আল্লাহতায়ালা এ জন্যই মুমিনদের নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করেন। সেই সাথে ঈদের জামাতে যারা অংশগ্রহণ করে তাদের সব গুনাহ তিনি মাফ করে দেন।

মহানবী (দ.) বলেন, ‘আসমানে ঈদের দিনকে পুরস্কার দিবস নামকরণ করা হয়। ঈদের নামাজ শেষে ফেরেশতারা ঘোষণা করতে থাকে, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের পাপসমূহ মাফ করে দিয়েছেন, তোমরা পুতঃপবিত্র হয়ে গৃহে ফিরে যাও। [তাবারানি কাবির, সাদ ইবন আউস রা. থেকে বর্ণিত, তারগিব ২/১৫৯]

মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান ঈদের নামাজ আদায় প্রসঙ্গে বলেন, ‘যারা মসজিদে যেতে পারছেন না বা সতর্কতামূলক যেতে চান না তাদের ঈদের নামাজ জামাতেই পড়তে হবে। জামাত ছাড়া একাকী পড়ার বিধান শাফেঈয়ী মাজহাবে আছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ হানাফি মাজহাব অনুসরণ করেন।’

তিনি আরো জানান, হানাফি মাজহাবের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, জামাত ছাড়া একাকী ঈদের সালাত আদায় করা যায় না। [ইবন রুশদ, ১/১৫৯, মুহিতে বুরহানি ২/২২৯]

মহানবী (দ.) অথবা তাঁর সাহাবীদের কেউই কখনো ঈদ একাকী আদায় করেননি। কোনো একটি বর্ণনায়ও একাকী ঈদের নামাজ আদায়ের কথা পাওয়া যায় না বলেও উল্লেখ করেন এই আলেম।

মসজিদ ছাড়া ঘরে ঈদের জামাত করা যাবে কিনা- এমন বিষয়ে জানা যায়,  শর্তসাপেক্ষে তা করা যাবে। ইমাম ছাড়া কমপক্ষে তিন জন বয়স্ক পুরুষের অংশগ্রহণে ঘরে ঈদের জামাত আদায় করা যাবে। এবং তা আদায় করতে হবে বড় ঘরের বৈঠক খানায় অথবা বাড়ির ছাদে কিংবা উঠানে অথবা যে কোনো খোলা জায়গায়।

হযরত আনাস (রা.) একবার ঈদের নামাজ পড়তে না পারায় তিনি বাড়ির সকলকে একত্র করে তার গোলামকে ঈদের নামাজের ইমামতি করতে বললেন। [বুখারী শরীফ ১/১৩৪]

এসব শর্ত সবার জন্য পালন সকলের জন্য সহজ হবে না। সকলের বাড়ির সামনে খোলা জায়গাও নেই। সে ক্ষেত্রে ঈদের নামাজ আদায় না করে চার রাকাত চাশতের নামাজ আদায় করার কথা বলেছেন হযরত ইবন মাসউদ (রা.)। [ইবন আবি শাইবা ৪/২৩৫]

আতা ইবন রাবাহ বলেছেন, ‘কোনো কারণে ঈদের নামাজ পড়তে না পারলে দুই রাকাত চাশতের নামাজ আদায় করবে ‘ [বুখারী ১/ ১৩৪]

হানাফি মাজহাবে এ জন্য দুই রাকাত ও চার রাকাত উভয়টির অনুমোদন রয়েছে। তবে ফতোয়ার কিতাবাদিতে ‘চার রাকাত পড়া উত্তম’ লেখা হয়েছে। [মুহিত ২/২২৯, শামী, আলমগিরি, বাদায়ে, বাহর, মাজমাউল আনহুর, মুখতাসারুত তাহাভি]

তবে আসল কথা হলো, ঈদের নামাজ অবশ্যই ঘরে আদায় করা যাবে। সেটি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জামাতের সাথেও হতে পারে, না হলে চাশতের নামাজের মাধ্যমেও এর ফজিলত আদায় করা যায় বলে জানান আলেমরা।

বাংলা/এসএ/

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
Page rendered in: 0.1481 seconds.