ছবি : সংগৃহীত
ছোটবেলায় প্রায় সবাইকে বাম হাতে একটি টিকা দেয়া হয়েছে, যেটা হচ্ছে বিসিজি বা ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন টিকা। এটি যক্ষার প্রতিষেধক হিসেবে শৈশবে দেয়া হয়েছিল। এ মুহূর্তে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান ভাবতে পারেন যদি আপনার বাম হাতে থাকে বিসিজি টিকার দাগ। আর এই টিকাই প্রতিরোধ করতে পারে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস।
মার্কিন বিজ্ঞানিরা এক গবেষণায় দাবি করছেন, বিসিজি প্রতিষেধক করোনায় সংক্রমণের গতি অনেকটাই কমিয়ে দেয়। অন্তত প্রথম ৩০ দিনে তা সম্ভব।
'সায়েন্স অ্যাডভান্স' নামে একটি অগ্রণী মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। যে দেশগুলোতে বিসিজি টিকা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, সেই দেশগুলোতে করোনা হানা দেয়ার পর অন্তত প্রথম ৩০ দিন সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কম।
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গত ২৯ মার্চ পর্যন্ত আমেরিকায় ২৪৬৭ জনের মৃত্যু হয়। গবেষকরা দাবি করেছেন, আমেরিকায় যদি কয়েক দশক আগেই বিসিজি টিকা নেয়া বাধ্যতামূলক থাকত, তাহলে সেই সংখ্যাটা কমে ৪৬৮-এর আশেপাশে থাকতে পারত।
চীন এবং ভারতের মতো দেশে বিসিজি টিকা প্রয়োগকে সরকারি কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এই দেশগুলোতে মৃত্যু হারও তুলনামূলকভাবে কম। চিকিৎসকদের একাংশেরও দাবি, এই দেশগুলোতে বিসিজি টিকাই মানুষকে করোনার প্রাণঘাতী ছোবল থেকে রক্ষা করছে।
মার্কিন এই গবেষণায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে প্রথম ৩০ দিনে ১৩৫টি দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এবং ১৩৪টি দেশে দৈনিক মৃতের সংখ্যার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। তা থেকেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকরা। তবে বিসিজি টিকা যে করোনা রুখতে শতভাগ কার্যকর নয়, সে কথাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানিরা।
ইন্ডিয়ান কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস-এর ডিন শশাঙ্ক যোশী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিসিজি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ এবং করোনার সংক্রমণকে দমিয়ে রাখতেও এর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়।’
উদাহরণ হিসেবে ওই চিকিৎসক পর্তুগালের কথা বলেছেন। কারণ পর্তুগালে বিসিজি টিকা বাধ্যতামূলক। প্রতিবেশী দেশ স্পেনে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল হয়েছে পর্তুগাল।