জো বাইডেন। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দিকে তাকিয়ে রয়েছে সারাবিশ্ব। আর একই সঙ্গে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ যে, জো বাইডেন জয়লাভ করলে তার পররাষ্ট্রনীতি কি হবে। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে তার নীতি কি হবে, সেটিও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
এই নির্বাচনে জো বাইডেন জয়ী হলে- বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তৃত এশিয়া-প্যাসিফিক নীতিমালার মধ্যে রূপ পাবে। এছাড়াও এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা অগ্রাধিকার পেলে ও সামরিকীকরণের প্রচেষ্টা কমিয়ে দিতে পারে। আর এমনটি হলে তা বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য ভালো হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে ড. আলী রিয়াজ বলেন, সম্ভাব্য বাইডেন প্রশাসনে যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া-প্যাসিফিক নীতির পাশাপাশি এর সামগ্রিক বৈদেশিক নীতির ধরনে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বর্তমানে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির (আইপিএস) মাধ্যমে সামরিকীকরণের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা চলছে। তবে বাইডেন এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক দিকগুলোতে বেশি জোর দেবেন বলে মনে হচ্ছে।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমস জানায়, জাপান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র এই চারটি ‘কোয়াড’ দেশ মিলে ৩ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে যৌথ সামরিক মহড়ার সূচনা করে এবং অস্ট্রেলিয়া ১৩ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মহড়ায় যোগদান করে।
এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, যদি সাধারণ প্রতিযোগিতা অক্ষত রেখে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান উন্নতির সাথে সহযোগিতার সুযোগ থাকে। তাহলে সামরিকীকরণের প্রচেষ্টা ধীর হয়ে যেতে পারে বা অপসারণ করা হতে পারে। স্বস্তির বিচারে এটি আমাদের পক্ষে ইতিবাচক হবে বলেও উল্লেখ করেন এই পররাষ্ট্র বিশ্লেষক।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলেন, যদিও মার্কিন নীতি চীনকে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকবে এবং এ অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে থামানোর চেষ্টা করবে। তবে তা ট্রাম্প প্রশাসনের মতো হবে না।
তিনি আরো বলেন, আমি আশা করি প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতার সম্পর্ক বিকশিত হবে। সেই হিসেবে এ অঞ্চলে মিত্রদের সাথে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উভয়ই জোরদার করা হবে।
অধ্যাপক রিয়াজ আরো বলেন, ওয়াশিংটন ও ঢাকায় যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। এই সম্পর্কের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার মাত্রা রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া বাইডেন প্রশাসন বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করতে পারে বলেও মনে করেন ড. রিয়াজ।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে যিনিই ক্ষমতায় আসুন না কেন বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই। পররাষ্ট্র নীতি কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে না। যিনিই ক্ষমতায় আসুক, আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
সূত্র : ইউএনবি
বাংলা/এনএস