ফাইল ছবি
সন্ত্রাসী হামলায় ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদেহ নিহত হয়েছেন। গতকাল ২৭ নভেম্বর, শুক্রবার তেহরানে প্রদেশের দামাভান্দ জেলার আবসারদ শহরের দামাবন্দ এলাকায় একদল আততায়ীর চতুর্মুখী বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলিতে তিনি আহত হন।
তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত ফার্স নিউজ এজেন্সি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ এই হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনো ‘রাষ্ট্রের মদদ’রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। স্পষ্টতই এই অভিযোগের তীর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের দিকে।
ফাখরিজাদেহ ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্স ইনোভেশন অ্যান্ড রিচার্সের (এসপিএনপি) প্রধান ছিলেন।
২০১৫ সালে তাকে ম্যানহাটন প্রকল্পের পরিচালক জে রবার্ট ওপেনহাইমারের সঙ্গে তুলনা করেছিল নিউইয়র্ক টাইমস, যে প্রকল্প থেকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি হয়েছিল। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরাও তাকে ‘ইরানি বোমার জনক’ হিসেবে অভিহিত করতেন।
মোহসেন ফাখরিজাদেহকে ইরানের জন্য পরমাণু অস্ত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বলে বারবার ইসরায়েলসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নথিতে উঠে এসেছে। যদিও বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান।
ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ‘দুর্ভাগ্যবশত চিকিৎসকরা তাকে বাঁচিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। দীর্ঘ সংগ্রাম এবং অনবদ্য অবদান রেখে এ বিজ্ঞানী সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ হয়েছেন।’
২০১৮ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, এ বিজ্ঞানীর নাম মনে রাখবেন।
তবে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মোহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইতোপূর্বে ২০১০ থেকে দুই বছরের মধ্যে চার জন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী গুপ্তহত্যার শিকার হন। ওইসব হত্যাকাণ্ডের জন্য বরাবরই ইসরায়েলের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে ইরান। তবে তা অস্বীকারও করে আসছে ইসরায়েল।
বাংলা/এসএ/