ছবি : সংগৃহীত
বুধবার এশিয়ান টোব্যাকো (প্রাইভেট) লিমিটেড, ঈশ্বরদী রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে একটি আধুনিক সিগারেট এবং তামাক প্রসেসিং প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
চুক্তিতে বলা হয়েছে কোম্পানিটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। মানবাধিকার সংস্থা হিসাবে, ভয়েসেস ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েসেস) তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে বাংলাদেশে আরও একটি তামাক কারখানা স্থাপনের অনুমতি প্রদান করার ফলে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত জাতি হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার বিরুদ্ধে যায়।
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধিতা করা ছাড়াও, ২০ লাখ ডলারের এই বিনিয়োগ বাংলাদেশী নাগরিকদের জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকিস্বরুপ।
বিনিয়োগের পরিমাণকে টাকায় রূপান্তর করা হলে এশিয়ান টোব্যাকো (প্রাঃ) লিমিটেডের বিনিয়োগের পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ১৭ কোটি টাকা। অথচ, সরকার প্রতি বছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ৩০,৫৬০ কোটি টাকা ব্যয় করে। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক ১১৯ কোটি ৫০ লাখ সিগার অ্যান্ড সিগারেটস স্টিক্স, ফিল্টার স্টিকস, সিগারেটের প্যাকেট, সিগারেটের বক্স প্যাকেট এবং ৭৩,২০৫ কেজি টোব্যাকো উৎপাদন করার লক্ষ্য নিঃসন্দেহে তামাকজনিত রোগের কারণে মৃত্যু এবং অসুস্থতার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলবে।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেছেন, "একটি তামাক সংস্থাকে দেশে নতুন কারখানা স্থাপনের অনুমতি দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সরাসরি বিরোধিতা করে এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে দক্ষিণ এশীয় স্পিকারের সম্মেলনে ২০১৬ সালে তিনি যা বলেছিলেন, তার সাথে সরাসরি বিরোধপূর্ন। এভাবে চলতে থাকলে, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ হয়ে ওঠার স্বপ্ন শুধুমাত্র স্বপ্ন হিসাবেই থাকবে।”
বাংলাদেশ একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি, এবং এটি অনেক উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য একটি রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আমরা যদি বিনিয়োগের নামে ‘মৃত্যু ব্যবসায়ীদের’ আরও বেশি উত্পাদন করার অনুমতি প্রদান করতে থাকি তবে তারা অবশ্যই জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হয়ে দারিয়ে উন্নয়নের লাগাম টেনে ধরবে।