ইফতেখার ফারদিন দিহান। ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর কলাবাগানের স্কুলছাত্রী আনুশকা নূর আমিনের সম্মতিতেই তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলে দাবি করেছেন গ্রেপ্তার হাওয়া ইফতেখার ফারদিন দিহান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এই তথ্য জানিয়েছেন ধর্ষণ ও হত্যা মামলার একমাত্র এই আসামি।
৮ জানুয়ারি, শুক্রবার দুপুরে দিহানের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম এ তথ্যগুলো জানান রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান।
এ বিষয়ে সাজ্জাদুর রহমান বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুশকাকে ভর্তির আগেই মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে আনোয়ার খান মেডিকেল হাসপাতালে অভিযান চালাই। দিহানকে আটক করে হেফাজতে নিই। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার ব্যাপারে স্বীকার করেছে। নিজেদের পারস্পারিক সম্মতিতেই তাদের দৈহিক সম্পর্ক হয়। মেলামেশার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। আনুশকা অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়, সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ওই স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত তানভীর ইফতেখার দিহান (১৮) দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ৮ জানুয়ারি, শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির হয়ে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন দিহান।
জবানবন্দি শোনার পর দিহানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান। ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এর আগে, এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর বাবা তানভীর ইফতেফার দিহানকে একমাত্র আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় হাসপাতাল থেকে আটক দিহানের তিন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, গত রাতে দিহানকে আসামি করে ছাত্রীর বাবা ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন। এখন মামলাটির তদন্ত চলছে। এতে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, ৭ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলাবাগান থানায় ফোন কর। তারা জানায়, এক কিশোরীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে এনেছেন এক তরুণ। কিশোরীর শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। খবর পেয়ে নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান ওই তরুণকে আটকে রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।
আরো জানায়, এরপর কলাবাগান থানার পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে ওই তরুণকে আটক করে। খবর পেয়ে ওই তরুণের তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদেরকেও আটক করা হয়। পরে চারজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ পরে ওই ছাত্রীর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এদিকে পুলিশের এসি আবুল হাসান জানান, সুরতহাল প্রতিবেদনে মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
বাংলা/এনএস