ছবি : সংগৃহীত
শিগগিরই নতুন করে স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির বর্তমান শাসক ও সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর গতকাল ৮ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সন্ধ্যায় প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে ভাষণ দেন তিনি। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যখন ক্রমেই ফুঁসে উঠছে দেশটির সাধারণ মানুষ তখনই এমন ঘোষণা দিলেন জেনারেল মিন অং হ্লাইং।
তিনি ভাষণে বলেন, ‘আগের সময়ের চেয়ে এবারের সামরিক সরকার একেবারেই আলাদা।’
সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে রয়েছে উল্লেখ করে পূর্বের সামরিক শাসনের তুলনায় এই সামরিক সরকার ‘স্বচ্ছ ও সৃশৃঙ্খল গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় তার প্রতিশ্রুত নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেননি মিন অং হ্লাইং। তবে ভাষণে নির্বাচন কমিশন সংস্কারের ঘোষণাও দেন তিনি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি, সোমবার ভোরে এক অভিযানে সু চি, রাষ্ট্রপতি উয়িন মিন্টসহ শীর্ষ নেতাদের আটক করা হয় বলে এনএলডি’র মুখপাত্র মিও নয়েন্ট আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোকে নিশ্চিত করেছেন। এর পরপরই দেশে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা সেনা-নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে প্রচার করা হয়।
দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সাথে অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বেসামরিক সরকারের বেশ কিছুদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে এনএলডি। তবে প্রতারণার অভিযোগ তুলে এই ফল মেনে নিতে অস্বীকার করে সেনাসমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)। তারা নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল।
এদিকে অভ্যুত্থানের পরপরই ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেয় সামরিক জান্তা। তবে এসব উপেক্ষা করেই নজিরবিহীন বিক্ষোভ করেছে মিয়ারমারের নাগরিকরা।
দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে গতকাল সোমবার ১০ হাজারের বেশি মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেন। গণআন্দোলনের এই তৃতীয় দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষও বেঁধে যায়। পরিস্থিতি যখন ধীরে ধীরে জটিলতার দিকে মোড় নিচ্ছে, তখনই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। এদিকে গতকাল রাত থেকেই দেশটির সাত শহরে ঘোষণা করা হয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ।
বাংলা/এসএ/