ছবি : সংগৃহীত
মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনী ও মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ২০ জনের। চলতি সপ্তাহে সেনাশাসনের বিরোধীরা জনতার উদ্দেশ্যে ‘প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধের ডাক’ দেয়ার পর তৈরি হয় এ রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি।
মিন থার গ্রামে বৃহস্পতিবার থেকে সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে সশস্ত্র লড়াই চলছে। নিহতদের মধ্যে স্থানীয় মিলিশিয়া ছাড়াও রয়েছে সাধারণ গ্রামবাসীও।
সেনাশাসিত সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন সংঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় দৈনিক ইরাবতী।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, মিয়ানমারের অধিকারকর্মী ও সেনাবাহিনীর বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। ‘বহির্বিশ্বের কার্যকর পদক্ষেপের’ অভাবে মিয়ানমারের জনতাই সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলছে বলে অভিযোগ পক্ষগুলোর।
সিভিল ডিসওবিডিয়েন্স মুভমেন্ট শনিবার এক বিবৃতিতে বলে, ‘পাল্টা লড়াই করা ছাড়া মিয়ানমারের তরুণদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।’
মিয়ানমারের সেনা সরকারবিরোধী জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভমেন্টের (এনইউজি) সঙ্গে সরাসরি আলোচনার জন্য জাতিসংঘ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিনিধিদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে সিভিল ডিসওবিডিয়েন্স মুভমেন্ট।
জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিশেষ প্রতিনিধি কে, সে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক করবে সাধারণ পরিষদ। বিষয়টি সামনে রেখে মিয়ানমারের বৈধ সরকারদলীয় প্রতিনিধি হিসেবে এনইউজির স্বীকৃতি অজর্নে চলতি সপ্তাহে একটি কর্মসূচি নিতে যাচ্ছে সেনাবিরোধীরা।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আইনপ্রণেতারা সংঘবদ্ধ হয়ে গঠন করে এনইউজি। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং সেনাসদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা হিসেবে নেয়া হয় এ পদক্ষেপ।
রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গত প্রায় আট মাস ধরে চরম অস্থিতিশীল মিয়ানমার। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ, অবরোধ, ধর্মঘট। সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর চড়াও হয়েছে বিরোধীরা।
মিয়ানমারের মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১ হাজার ৫৮ বিরোধিতাকারীর। আটক রয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষ।
দেশটির সর্ববৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুন আর সাজাইং অঞ্চলে শনিবার সকালেও অনেকেই ধরপাকড়ের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।