ছবি : বাংলা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল বলেছেন, আমার দুঃখ হয় যে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর সেরকম কোন লেখা হয় নাই। মুক্তিযুদ্ধ এদেশের সকল অংশকে স্পর্শ করেছে। যেটি নিয়ে এদেশের মানুষের কোন না কোন স্মৃতি আছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যদি বড় একটি মহাকাব্য লেখা না হয় তা হলে আফসোস থেকে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের দূর্নীতি, ক্রাইম নিয়ে আমরা লিখছি। যার ফলে দেশের খারাপ বিষয়গুলো পরিচিতি পাচ্ছে। আমি দেখার অপেক্ষা করছি আমাদের দেশের সত্যিকারের সাহিত্য, সুন্দর সাহিত্য, ভাল সাহিত্যগুলো পৃথিবীতে, ইউরোপে আমাদের সমৃদ্ধ সাহিত্যকে পরিচিত করবে। যেগুলাে আমাদের পছন্দের এবং যা আমরা পরিবর্তন না করি। এখানে আমাদের যে কোনো দোষ নেই তা না। আমরা যে লিখি তার পরিধি ছোট। আমাদের এই লেখার পরিধিতে প্রচুর রোমান্স, দারিদ্র ও কষ্টগুলো উঠে আসে। এছাড়া পৃথিবীতে মানুষের যে নানা ধরনের অভিজ্ঞতা আছে সেগুলো আসেনা। গত সোমবার (৩০ মে) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কলা ও মানবিক অনুষদ উদ্যােগে আয়োজিত 'সমকালীন সাহিত্য প্রসঙ্গ' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বেশী বেশী বইপড়া ও টেকনোলজি ব্যবহারে সর্তকের কথা বলেছেন।
এদিন সকাল ১০টায় কলা ও মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের হলরুমে 'সমকালীন সাহিত্য প্রসঙ্গ' শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন।
এসময় বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম মাওলা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ বিদ্যমান। নালন্দার মতো বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের উপমহাদেশেই। যা পৃথিবীতে বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রমের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করেছিল। এমনকি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের বিহারগুলোও এক সময় সুদূর চীন পর্যন্ত শিক্ষাবিস্তারে সক্ষম হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, শিক্ষার্থী সবাইকে গবেষণামুখী হতে হবে। আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়কে গুণগতমানের দিক থেকে উন্নত বিদ্যাপীঠে রূপান্তর করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। গবেষণার জন্য বরাদ্দ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খুবই আন্তরিক। ভৌগলিক দিক থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টির অপূর্ব জায়গা। সেজন্যই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জ্ঞানমুখী করতে অনুষদ পর্যায়ে এ রকম সেমিনার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এভাবেই জ্ঞান সৃষ্টির মাধ্যমে এগিয়ে যাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
পরে ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের আলাদা আলাদা সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী, ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক ড. মোহা. হাবিবুর রহমান, প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।