ছবি : সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) হামিদুল্লাহ সালমান নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে মারধর এবং তার সঙ্গে থাকায় সাংবাদিককে জোড় করে ছাত্রদল কর্মী বানানো, ফোন তল্লাশি ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৭ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্বরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের উপস্থিতিতে এসব ঘটে। সালমান ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের (৪৯তম ব্যাচ) ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফরিদুর রেজা খান একই বিভাগের ও বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বাংলা ডট রিপোর্ট নিউজপোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বরে বসে কথা বলছিলেন হামিদুল্লাহ সালমান ও ফরিদুর রেজা। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সেখানে গিয়ে হামিদুল্লাহকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের পাশের যাত্রী ছাউনির পেছনে নিয়ে যান। তারা সেখানে হামিদুল্লাহকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে হামিদুল্লাহকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ফরিদুর রেজা। পরে তাদের দুজনের মোবাইল ফোন তল্লাশি করা শুরু করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা সাংবাদিক রেজাকেও জোড় করে ছাত্রদল কর্মী বানানো এবং অপকর্মে লিপ্ত এমন অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা হামিদুল্লাহকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফরিদুর রেজা খান বলেন, আমি আর সালমান একসঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এসময় হুট করেই ছাত্রলীগের নেতারা এসে হামিদুল্লাহকে মারধর শুরু করে। আমি তাদেরকে বাধা দিতে চেষ্টা করলে তারা আমার ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে বিশেষ একটি ছাত্রসংগঠনকে আমি তথ্য দিয়ে সহায়তা করছি-এমন অভিযোগ তুলে তারা আমার মোবাইলের ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, গ্যালারিসহ ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য ঘাটাঘাটি করে।
এ বিষয়ে ছাত্রদল কর্মী হামিদুল্লাহ সালমান বলেন, আমি ছাত্রদল করি বলে ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে। তারা জোর-জবরদস্তি করে আমার জবানবন্দিমূলক একটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। মারধরকারীদের মধ্যে একজনকে আমি চিনতে পেরেছি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, ওই ছাত্রদল কর্মীর অপতৎপরতার পরিকল্পনা ছিল। আমার কর্মীরা তাকে আটক করেছে। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর ছাত্রদলের ওই ছেলের সঙ্গে এই ছেলের (সাংবাদিক) কনভারসেশন তল্লাশি করা হয়েছে। দুএকজন কাজটি করেছে হয়তো।
এদিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ওই ছাত্রদল কর্মীকে বলা হয়েছিল ক্লাস-পরীক্ষা বাদে ক্যাম্পাসে যেন না আসে। কারণ সে ক্যাম্পাসে নানা নাশকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিঘ্নিত করার চক্রান্ত করছিলেন মর্মে একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তবে মারধর করার বিষয়ে আমি জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমাকে কোনো অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। অভিযোগপত্র পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।