ছবি : সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণের ভোট ছাড়া ভিন্ন কোনো পথে ক্ষমতায় আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
বিএনপি এবং তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলা মানুষের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষও জিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কথা বলেছিল। এখনও অনেকে খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার সঙ্গে আছে। মানিলন্ডারিং, অস্ত্র কারবারি ও ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার আসামি তারেক। খালেদা এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলার আসামি। এ অপরাধীদের সঙ্গে অনেক জ্ঞানী-গুণীও গণতন্ত্রের কথা বলে। তারা বুদ্ধিজীবী না, তারা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীজীবী।
তিনি বলেন, বিএনপির দুই নেতা আমার কাছে এসে বলেছে— তারা নাকি টাকা না দিলে মনোনয়ন দেয় না। টাকা না দেওয়ায় তাদের মধ্য থেকে একজন মনোনয়ন পায়নি। এভাবেই তাদের নির্বাচন হয়। ফেলো কড়ি, মাখো তেল, অর্থাৎ যে টাকা দেবে সে প্রার্থী।
বিএনপির শাসনামলের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার পেটুয়া বাহিনী সারাদেশে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেয়। ঢাবিতে রাতের অন্ধকারে ভিসিকে সরিয়ে নতুন আরেকজনকে বসিয়ে দিয়ে ভিসির পদটাও দখল করে নেয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকসহ বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করে। তাদের অত্যাচার-নির্যাতনে বাংলাদেশ ছিল নির্যাতিত। শুধু ক্ষমতায় থাকলেই না, ক্ষমতার বাইরে থেকেও অগ্নিসন্ত্রাসের কথা সবার জানা।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া হুমকি দিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগকে শিক্ষা দিতে ছাত্রদলই যথেষ্ট। তারা ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। আর আমি বই, খাতা-কলম তুলে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম-শিক্ষা শুধু নিজেরাই গ্রহণ করবে না, গ্রামে গিয়ে নিরক্ষর মানুষকে শিক্ষা দেবে। তারা সেটিই করেছে। আমাকে রিপোর্টও দিয়েছে। আমাদের পেটুয়া বাহিনী লাগে না।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরের ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি ইতিহাস বিকৃতি, জাতির পিতার ভাষণ নিষিদ্ধ, জয় বাংলার স্লোগান নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজ করেছে।
তিনি বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করে তিন হাজার মানুষ হত্যা করে। বাস, রেল, লঞ্চ কোনো কিছুই রেহাই পায়নি। নির্বাচন ঠেকানোর নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যে গণতন্ত্রের কথা বলে, সেটা গণতন্ত্র না। সেটি ক্যান্টমেন্টে বন্দি কাউফিউতন্ত্র। বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন— সেটা ছিল কারফিউতন্ত্র, গণতন্ত্র না।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।