ছবি : বাংলা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি,
নিয়োগ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে পেটানোর অভিযোগে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রোকনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী। একই অভিযোগে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা রোকনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাত ৯ টায় রৌমারী প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে রোকনুজ্জামান রোকনকে দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি ঘোষণা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা। এর আগে শনিবার বিকালে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও আসাদুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে অভিযুক্ত করে রৌমারী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী। রৌমারী থানার ওসি রূপ কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা লিখিত বক্তব্যে বলেন, 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রৌমারী উপজেলা শাখার সদ্য ঘোষিত কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন কর্তৃক উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.নুরুন্নবীকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করার ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। এতে দলের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে রোকনুজ্জামান রোকনকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের পদ সহ দলীয় সকল পদ পদবী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।' সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবীর করা মামলায় রোকনুজ্জামান রোকনসহ অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি রূপ কুমার সরকার। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।
এর আগে নিয়োগ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকালে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রার সামনে তারই অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবীকে কিলঘুষি মারেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা রোকনুজ্জামান রোকন। পরে শুক্রবার দুপুরে প্রধান শিক্ষককে পেটানোর একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ হলে ঘটনাটি সবার সামনে আসে।
ঘটনার পর অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন দাবি করে বলেন, 'দলের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা মাস্টারের নির্দেশে আমি প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে যাই এবং পরে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আবু হোরায়রার নির্দেশে তাকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারি।'
তবে রোকনুজ্জামানের এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা বলেন, ‘ প্রশ্নই আসে না। সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছেন। বরং ঘটনার পর আমি রোকনকে ধাক্কা দিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছিলাম। নিজের দায় এড়ানোর জন্য তিনি আমার ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। আমি নির্দেশ দিয়ে থাকলে রোকন তা প্রমাণ করুক।’